Monday, August 5, 2019

স্বপ্ন নদীর বাঁকে

0 comments



















॥ সেলিনা জাহান প্রিয়া ॥ 
জীবনের উপন্যাসে আমি যে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাই--
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে লিখি আবির আল্পনায়
একটু একটু করে,তোমাকে উপন্যাস করে তুলি ।
- বলেছিলে-- মেহেদী রাঙ্গা হাত ধরে জোছনার প্রহর
 ভালোবাসা কেবলেই প্রতিশ্রুতি হতে পাড়ে না !
বুকে মধ্যে হাত রেখে বলেছিলে আমি বিশ্বাস ।
- বলেছিলে-- একটা গোলাপের কলব দিয়ে , রোপণ কর ,
 দেখবে আমার ভালবাসা গোলাপের গন্ধ বিলাবে
প্রত্যয় ভর মন নিয়ে আমি আজো জল দিয়ে যাই ।
- ফুল নিতে আসবে তুমি তাই আমি রোজ অপেক্ষা করি
ফুলে ভরা, প্রেম-বাগানের সব ফুল তোমার জন্য
এখন সেই ফুলের পাপড়ি ঝড়ে যায় অবেলায় ।
- বলেছিলে-- ডাকঘরের রাস্তাটা যেন চিনে রাখি
 গ্রামের ছায়া রাস্ত আমাকে দেখে রোজ কষ্ট পায়
খুব দৃঢ় মনে আমি চিঠির আশায় ডাক ঘরে যাই।
- আমি খুঁজি ; কিন্তু তুমি নেই তোমার বিশ্বাসে !
পাহাড়ে নেই ,নদীতে নেই,বাগানে নেই কোথাও নেই
এই না থাকাটা, এখন বিশ্বাসের বিশ্বাস !!
- উপন্যাস আমি যে লিখে যাই , তোমার অনুভবে
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে উপন্যাস সমাপ্ত হয়
অমীমাংসিত কিছু প্রশ্ন থেক যায় হাঁয় তবু
 - আমার ভালোবাসা অপেক্ষার চাদরে উমতুলে কুয়াশায়
আমার বিশ্বাস ; আমার স্বপ্ন তোমার কাছে আমানত
আমি যে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাই সেই খেয়ানতের ভয়ে ।
- বলেছিলে তুমি - হারিয়েই বেঁচে থাকবে সোনার মহলে
আমি তো প্রতিদিন পুড়তে পুড়তে এখন সেই মহল
স্বপ্ন নদীর বাঁকে, আশা নামের বাঁধানো ঘাট বসা ।
Read more...

চিলাহাটিতে বিদ্যুত্‍ এর ভেলকিবাজীতে আহমদুল হক সোয়েবের একটি কবিতা

0 comments
Read more...

দ্রোহের আগুন

0 comments



















॥ সেলিনা জাহান প্রিয়া ॥ 
জীবনের উপন্যাসে আমি যে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাই--
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে লিখি আবির আল্পনায়
একটু একটু করে,তোমাকে উপন্যাস করে তুলি ।
- বলেছিলে-- মেহেদী রাঙ্গা হাত ধরে জোছনার প্রহর
 ভালোবাসা কেবলেই প্রতিশ্রুতি হতে পাড়ে না !
বুকে মধ্যে হাত রেখে বলেছিলে আমি বিশ্বাস ।
- বলেছিলে-- একটা গোলাপের কলব দিয়ে , রোপণ কর ,
 দেখবে আমার ভালবাসা গোলাপের গন্ধ বিলাবে
প্রত্যয় ভর মন নিয়ে আমি আজো জল দিয়ে যাই ।
- ফুল নিতে আসবে তুমি তাই আমি রোজ অপেক্ষা করি
ফুলে ভরা, প্রেম-বাগানের সব ফুল তোমার জন্য
এখন সেই ফুলের পাপড়ি ঝড়ে যায় অবেলায় ।
- বলেছিলে-- ডাকঘরের রাস্তাটা যেন চিনে রাখি
 গ্রামের ছায়া রাস্ত আমাকে দেখে রোজ কষ্ট পায়
খুব দৃঢ় মনে আমি চিঠির আশায় ডাক ঘরে যাই।
- আমি খুঁজি ; কিন্তু তুমি নেই তোমার বিশ্বাসে !
পাহাড়ে নেই ,নদীতে নেই,বাগানে নেই কোথাও নেই
এই না থাকাটা, এখন বিশ্বাসের বিশ্বাস !!
- উপন্যাস আমি যে লিখে যাই , তোমার অনুভবে
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে উপন্যাস সমাপ্ত হয়
অমীমাংসিত কিছু প্রশ্ন থেক যায় হাঁয় তবু
 - আমার ভালোবাসা অপেক্ষার চাদরে উমতুলে কুয়াশায়
আমার বিশ্বাস ; আমার স্বপ্ন তোমার কাছে আমানত
আমি যে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাই সেই খেয়ানতের ভয়ে ।
- বলেছিলে তুমি - হারিয়েই বেঁচে থাকবে সোনার মহলে
আমি তো প্রতিদিন পুড়তে পুড়তে এখন সেই মহল
স্বপ্ন নদীর বাঁকে, আশা নামের বাঁধানো ঘাট বসা ।
Read more...

ধর্ষিত বালিকার কর্পোরেট সমাজ

0 comments



















।। সেলিনা জাহান প্রিয়া ।। 
বালিকা তুমি বড় সুন্দরী, বাহ উঠতি বয়স
কাঁচা আমে রং লিগেছে ! বালিকা তোমার ,
 মাথায় কাপড় , শরীর ঢাকা , তাতে কি ?
চোখ যে আমার দারুন শিকারি ! আহ বালিকা !
বালিকা তোমাকে চাই আমার ! চাইয়েই চাই ।
বালিকা কে এক দিন ফাকা রাস্তায় শিকারি পায় 
স্বীকার করার সব সুযোগ !
তোমাকে ধর্ষণ করবে বালিকা
তোমার প্রেমিক পুরু্ষ ! তাঁর প্রেমের লালসায় ।
অসম্ভব যন্ত্রণায় কাতরাবে তুমি বালিকা
ধর্ষণের পর দৌড়াবে তুমি, বালিকা !
আমি চেয়ে দেখব তোমার বাচার আকুতি
বালিকা কত বার প্রেম চাইলাম দিলি না !
এখন মজা বুঝ প্রেমের নাম কত যন্ত্রণা !
বালিকা তোর জন্য আমার ঘুম আসতো না
বুকের ভিতর বালিকা ভোগের লালসা
প্রেম দিবি না !! এখন বুঝ ধর্ষণ কি যন্ত্রণা !!
ধর্ষিত বালিকা ! এখন
দৌড়াবে পুলিশ স্টেশানের দিকে।
 তারপর আর সময় নষ্ট নয়,
কত কি প্রশ্ন ? একা কেন গেলে 
 এই বয়সে কেউ কি একা বের হয়
মেয়ে মানুষ তুমি কেন আগে সাবধান হয় নাই ...
তৎক্ষণাৎ সারা পুলিশ স্টেশানের মানুষ গুলো
তাদের চোখে তোমাকে ধর্ষণ করবে, গুপনে
সারা শরীর জুড়ে নানা প্রশ্ন করে,
 বারবার প্রশ্ন করে মজা নিবে সারা রাতভর।
আর তুমি, কাদবে মাথা আর বুকের কাপড় ঠিক করে
মারাত্মক ভাবে ক্ষত বিক্ষত হবে তোমার মন ।
কেউ হয়ত দেখতে চাইবে কোথায় কোথায় কামড় দিল
কেউ দেখবে কতটা লাল হয়েছে শরীর ।
বারবার তুমি রক্তাক্ত হবে,
তোমার কান্না ফুপিয়ে ফুপিয়ে উঠবে।
সাপের কামড়ের মত তোমার সমস্ত সত্তা দখলে নেবে।
কিছু পুলিশ তোমাকে নিয়ে আসবে তোমার মহল্লায়,
সেখানে তোমাকে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করে মানসিক ভাবে
ধর্ষণ করা হবে দফায় দফায় ।
 তোমার প্রতিবেশী ছিঃ ছিঃ করবে
 আর বলবে সব শেষ
কি হবে মেয়েটার
তোমার মহল্লা
 তোমার সমাজ
তুমি ধর্ষিতা বলে ঘৃণার তীর চূড়ে মারবে,
তুমি মুখ লোকাবে,
নিজকে আড়াল করতে চাইবে,
পারবেনা।এ সমাজ তোমাকে দেখবে
 কোথায় কোথায় করেছে ধর্ষণের আঘাত ।
বালিকা তোমার হৃদক্রিয়া বন্দ হইতে চাইবে
কিন্তু পারবে না, তুমি শুধু কাদবে
তুমি তো বালিকা জন্ম হয়েছে 
শত বার ধর্ষণের জন্য ?
পুলিশ তোমাকে নিয়ে যাবে হাসপাতালে
সেখানে তোমার মনে হবে
তোমাকে নিয়ে আসা হয়েছে
এক জমের মৃত্যুর পাতালপুড়িতে।
হাসপাতালে আবার তোমাকে নিয়ে তৈরি হবে 
বিনোদন মূলক এক মেডিকেল টিম।
তোমাকে এবার তারা করিবে পরীক্ষার নামে
কত কিছু তবে তাঁকে ধর্ষণ বলা যাবে না !
বালিকা তাঁকে ধর্ষণ বলা যাবে না
 সেই টিমের সবাই তোমাকে উপভোগ করবে
বিবস্ত্র করে এক নতুন জন্ম নেয়া মেয়ে হিসাবে
 বালিকার সোনার দেহ তারা কষ্টি পাথরে দেখবে
বালিকা তোমার কষ্ট যাবে না ।
বালিকা এখানেই শেষ না ।
টু ফিঙ্গার টেস্টের নাম করে
তোমার অপ্রাপ্ত জরায়ুতে ঢুকিয়ে দেবে
তাদের সমস্ত কয়টা হাত।
তারাও কিছু বের করতে চায় 
বালিকা একবার ধর্ষণ তো
হাজার বার তোমার সাথে নাটক ।
তুমি কাঁদবে আর কাদবে
তুমি চিৎকার করবে আর করবে 
তোমার চিৎকারে বালিকা কি হবে ?
 তুমি তোমাকে হত্যা করতে চাইবে।
পারবে না কারণ! বালিকা
তাদের বিনোদন তো
এখনো শেষ হয়নি তোমাকে নিয়ে।
 অবুঝ বালিকা প্রেম করলা না কেন ?
যখন বিনোদন শেষ হবে 
তখন শুরু হবে আরেক রঙ্গমঞ্চ নাটক
 আদালত তাঁর নাম বালিকা ।
যেখানে থাকবে কালো পোশাক পড়া 
অনেক জ্ঞানী গুনি সব দালালেরা 
মিথ্যুক নিপুন অভিনেতা, তারা
নিপুন ভাবে ফুটিয়ে তুলবে তোমাকে
ধর্ষণ করার প্রক্রিয়া কাব্যিক ভাবে।
পুনঃ পুনঃ আলোচনায় আনবে
তোমার ভিতরে লোকান তোমার স্বপ্ন গুলো
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটে যাওয়া বিক্রিয়া, তুলে
যে আলোচনা চলতে থাকবে বছরের পর বছর।
তোমার বাবা এই রঙ্গমঞ্চ বন্ধ করতে চেষ্টা চালাবে
 মৃত্যুর ঠিক পৃর্ব মূহুর্ত অবধি,
কিন্তু পারবেন না।
এখানেই শেষ না বালিকা
তোমাকে নিয়ে লিখা হবে পত্রিকা জুড়ে
যা হয়েছে তাঁর চেয়ে বেশি !
তোমার ছবি ছপানো হবে প্রথম পাতায়
 যেন তুমি বাংলা সিনেমার উঠতি নায়িকা
যতই ছাপাবে ততই ব্যবসা !
বালিকা তুমি কিন্তু এখন কর্পোরেট ব্যবসা
 টি ভি নিউজে তুলে ধরবে তোমার ,
বাবা মা ভাই বোনের কান্যা
প্রতিবেশীর মতামত ! বালিকা নিউজটা কেমন হল
 তখন তারা কফির টেবিলে বসবে আড্ডা
তোমার ধর্ষণের খবর তারা ফ্যাশনের হাসি
 দিয়ে প্রচার করবে! কি মিষ্টি সে হাসি !
সেই খবর পাঠিকার মুখে !
যেন সিনেমা মুক্তি দিল তাঁর চ্যানেলে
তোমাকে নিয়ে ! তোমার ছবি নিয়ে
সোশ্যাল মিডিয়া ফেইস বুক টুয়েটার ,
লাইক আর কমেন্টের খেলা !
 কেউ হয়ত তোমার জন্
রাস্তায় নামবে প্রতিবাদের ব্যানার নিয়ে
সেই গুলো এবার ছাপাবে
সকল নিউজ আর মিডিয়ায় ।
বালিকা
বেশ অনেক পরে,
একদিন বালিকা তুমি দেখবে
তোমার পাশে আর কেউ নেই
তারিখের পর তারিখ
বালিকা গরীবের মেয়ে ধর্ষিত হয় না !
আর যদি হয় তখন বিচার পাওয়া যায় না।
কত গুলো পরীক্ষা বালিকা
সবাই কি পাস করে বালিকা
এমন অনেক বালিকা আজ
ফেইল করে আছে
 কে রাখে তার খবর
যদি ব্যবসা না আসে
এটা কর্পোরেট দুনিয়া ।।
 ধর্ষণের সময় তুমি
অসম্ভব ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত হওয়ার বদলে
কোন সুখ পেয়েছিলে কিনা?
সমাজ তাও জানতে চাইবেই
বালিকা !! প্রেম করবা না।।
Read more...

Saturday, August 3, 2019

দুসরা ‘ঈদ’ আত্মত্যাগের বিনিময়েই হয় কোরবানি

0 comments
‘ঈদ’ আরবি শব্দ। আসলে এর অর্থটাই হচ্ছে ফিরে আসা। এই ফিরে আসা’কে ঈদ বলা হয় এ কারণে যে, মানুষ বারংবার একত্রিত হয়ে সাধ্য মতো যার যা- উপার্জন তা অনেক খুশিতে আল্লাহ্ পাকের দরবরে সোয়াব এর আশায় আনন্দ উৎসব করে। বলা যায়, সোয়াবের পাশা পাশি একে অপরের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ দূর হয়। 
সুতরাং ঈদকে দ্বারাই মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাকে নিয়ামাত কিংবা অনুগ্রহে ধন্য করে থাকে। বারংবারই তাঁর ইহসানের নৈতিক শিক্ষা প্রদান করে। আল্লাহ্ তায়ালার প্রতিই ভালোবাসা লাভের উদ্দেশ্যে কিছু বিসর্জন দেয়াকে কোরবানী বলা যেতে পাবে।
সুতরাং আর্থিক ভাবেই সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপরেই কোরবানির হুকুম পালন ওয়াজিব হয়েছে। তাই সামর্থ্য থাকা সত্তে কেউ যদি কোরবানির মতো ইবাদত থেকে বিরত থাকে কিংবা কোরবানি না দেয়। তাহলে সেই ব্যক্তি অবশ্যই যেন গুনাহগার হবে। আল্লাহর হুকুমের আনুগত্যের মধ্যে কোরবানি একটি বিশেষ আমল। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে মহান আল্লাহ পাক মুসলিম উম্মাদের জন্য যেন ‘নিয়ামাত’ হিসেবেই ঈদ দান করেছে। হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যে ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় যখন আগমন করে ছিল তখন মদিনা বাসীদের ২টি দিবস ছিল, সে দিবসে তারা শুধুই খেলাধুলা করত।’ আনাস রাদি আল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুরুত্বের সঙ্গে প্রশ্ন করে ছিল এমন দুই দিনের তাৎপর্যটা কী? মদিনা বাসীগণ উত্তর দিলেন : আমরা জাহেলী যুগে এই দুই দিনে খেলা ধুলা করে কাটাতাম। তখন তিনি বলেছিলেন, আল্লাহ রাববুল আলামিন এই দু’দিনের পরিবর্তেই তোমাদেরকে এর চেয়েও শ্রেষ্ঠ দু’টো দিন দিয়েছেন। তাহচ্ছে মুসলিম উম্মার ‘ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর।’ সুতরাং শুধু খেলা-ধুলা বা আমোদ-ফুর্তির জন্যই যে দু’দিন ছিল তাকে পরিবর্তন করেই সৃষ্টিকর্তা এইদুটি ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের ঈদের দিনকেই দান করে ছিল। সমগ্র উম্মতগণ যেন ঈদের দিনেই মহান আল্লাহর শুকরিয়া, জিকির এবং তাঁর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনার সহিত শালীনতায় আমোদ-ফুর্তি ও নিজস্ব সাজ-সজ্জা কিংবা খাওয়া-দাওয়ার ব্যপারেও সবাই সংযম হতে পারে। এমন কথা গুলো বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ পুস্তকে ইবনে জারীর রাদি আল্লাহু আনহুর অনেক বর্ণনায় উঠে এসেছে। জানা দরকার, দ্বিতীয় হিজরিতে প্রথম ঈদ করে ছিল ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।’ তাই ইসলাম ধর্মে ‘বড় দুইটি’ ধর্মীয় উৎসবের দিনের মধ্যে একটি ঈদ হচ্ছে- ঈদুল আযহা। এইদেশে এমন উৎসবটিকে আবার অনেক মানুষরা কুরবানির ঈদ বলেও সম্বোধন করে। ‘ঈদুল আযহা’ মূলত ‘আরবী বাক্যাংশ’। এর অর্থটা দাঁঁড়ায় ‘ত্যাগের উৎসব।’ এরই মূল প্রতিপাদ্য বিষয়টা হচ্ছে ‘ত্যাগ করা’। এ দিনটিতে মুসলমান তাদের সাধ্যমত ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী উট, গরু, দুম্বা, ছাগল কোরবানি কিংবা জবাই দিয়ে থাকে। ঈদুল আজহার দিন যেন ঈদের সালাতের পূর্বে কিছু না খেয়ে সালাত আদায় করে। তার পরে কুরবানি দিয়েই গোশত খায়। এটাই সুন্নাত এবং বিশ্ব নবী তাই করে ছিল। “বুরাইদা রাদি আল্লাহু আনহু” হেকে বর্ণিত রয়েছে যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন না খেয়ে ঈদগাহে যেতো না। আবার ঈদুল আযহা’র দিন তিনি ঈদের সালাতের পূর্বেও খেতেন না। এমন “তাকওয়ার সহিত ‘কোরবানি’ আদায় করা দরকার। আবার এও জানা যায় যে, ‘কোরবানী দেওয়া পশুর রক্ত জমিনে পড়ার পূর্বেই আল্লাহ তায়ালা যেন সেই কোরবানি কবুল করে নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে। এখন এ ঈদ আনন্দের বাস্তবতার দিকে আসা যাক। ‘ঈদ’ শব্দটিকে যখন মানুষ প্রথম বুঝতে শিখে তখন তাঁদের শিশু কাল থাকে এবং সেসময় তারা বড়দের উৎসাহে ১ম ঈদের আনন্দকে উপভোগ করে। তারা সারা রাত না ঘুমিয়ে খুব ভোরে নতুন সুগন্ধি সাবান দিয়ে গোসল করে। তারপর ঈদের নামাজের জন্যই আতোর, সুরমা এবং নতুন নতুন জামা কাপড় পরে বাবা ভাইদের নিয়ে পাড়া- প্রতিবেশীদের সঙ্গেই যেন তারা প্রিয় ঈদগাহে যেত। তবে ঈদগাহে যে পরিবেশ হয়ে উঠে সেটিই মুলত ঈদের খুশি। ঈদগাহের মাঠে পায়ে হেঁটে যাওয়া বা আসার মজাই আলাদা। জানা যায়, ‘আলী রাদি আল্লাহু আনহুর’ বর্ণনা মতে সুন্নাত হলো ঈদগাহে- পায়ে হেঁটেই যাতাযাত করা। সুতরাং, উভয় পথের লোকদেরকে সালাম দেয়া এবং ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করাও ভালো হয়। উদাহরণ স্বরূপ নবীকারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে এক পথে গিয়ে আবার অন্য পথেই ফিরেছে। “ঈদুল আযহার” তাৎপর্য হলো ইসলাম ধর্মের নানা বর্ননায় যা পাওয়া যায় তা হলো এই, মহান ‘আল্লাহ তায়ালা’ ইসলাম ধর্মেরই এক নবী ‘হযরত ইব্রাহীম (আঃ)’কে স্বপ্নে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকেই আল্লাহ তায়ালাকে খুশির উদ্দেশ্যেই কুরবানির নির্দেশ দিয়ে ছিল। সেই আদেশেই ‘হযরত ইব্রাহিম(আঃ)’ তাঁর সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করার জন্যেই যেন প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সৃষ্টিকর্তা তাঁকে তা করতে বাধা দিয়ে ছিল। সেখানেই নিজ পুত্রের পরিবর্তেই একটি পশু কুরবানি হয়েছিল এবং তা হয়েছিল সৃষ্টিকর্তার নির্দেশেই। এ ঘটনাকে স্মরণ করেই বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা মহান আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্ঠি অর্জনে প্রতি বছর ঈদুল আযহা দিবসটি পালন হয়ে আসে। হিজরির বর্ষ পঞ্জির হিসাবেই জিলহজ্জ্ব মাসের দশ তারিখ থেকেই শুরু করে বারো তারিখ পর্যন্ত ৩ দিন ধরেই যেন ঈদুল আযহা চলে। হিজরি চান্দ্র বছরের গণনা অণুযায়ী “ঈদুল ফিতর” এবং ঈদুল আযহার মাঝে দু’মাস ১০ দিনের ব্যবধানেই হয়ে থাকে। আর দিন হিসেবেই তা সবোর্চ্চ ৭০ দিনও হতে পারে। জানা দরকার ঈদুল আযহার দিন থেকেই শুরু করে যেন পরবর্তী দু’দিন পশু কুরবানির জন্যেই নির্ধারিত থাকে। বাংলাদেশের মুসলমানেরা সাধারণত গরু বা খাসী “কুরবানি” দিয়ে থাকে। এক ব্যক্তি একটি মাত্র গরু, মহিষ কিংবা খাসি কুরবানি করতে পারে।
তবে গরু এবং মহিষের ক্ষেত্রেই সর্বোচ্য ৭ ভাগে কুরবানি করা যায় অর্থাৎ দুই, তিন, পাঁচ বা সাত ব্যক্তি একটি গরু, মহিষ কুরবানিতে শরিক হলে ক্ষতি নেই। তাই এ দেশে সাধারণত কুরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করেই- ১ ভাগ গরিব-দুঃস্থদের মধ্যে ১ ভাগ আত্মীয় -স্বজনদের মধ্যে এবং এক ভাগ নিজেদের খাওয়ার জন্য রাখা উচিত, তবে ইসলামের আলোকেই জানা যায়, এই ঈদের মাংশ বিতরনের জন্য কোন প্রকার সুস্পষ্ট হুকুম নির্ধারিত নেই। এমন কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রির অর্থগুলো দান করে দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। কোনো মুসাফির অথবা ভ্রমণকারির ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব নয়।
আবার ঈদুল আযহার ঈদের নামাজের আগেই ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পশু কুরবানি সঠিক হয় না। জানা যায়, এমন কুরবানির প্রাণী খাসী বা ছাগলের বয়স কমপক্ষে ১ বছর ও ২ বছর বয়স হতে হয় গরু কিংবা মহিষের বয়স। নিজ হাতে কুরবানি করাটাই উত্তম। এই কুরবানি প্রাণীটি দক্ষিণ দিকে রেখে কিবলা মুখী করে খুবই ধারালো অস্ত্র দ্বারা অনেক স্বযত্নে মুখে উচ্চারিত ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে জবাই করাটা ইসলাম ধর্মের বিধান। সুতরাং এই ‘ঈদ’ আনন্দে ভরে উঠুক প্রতিটি প্রাণ।
সবাই সবার প্রতি ‘ভালোবাসা ও আনন্দ’ নিয়ে একসঙ্গেই কাজী নজরুল ইসলামের ঈদুল আযহার গান অন্তরে ধ্বনিত করি:- “ঈদুল আযহার চাঁদ হাসে ঐ, এলো আবার দুসরা ঈদ, কোরবানি দে কোরবানি দে, শোন খোদার ফরমান তাকিদ। এমনি দিনে কোরবানি দেন, পুত্রে হযরত ইব্রাহিম। তেমনি তোরা খোদার রাহে, আয়রে হবি কে শহীদ।। 

লেখক:
নজরুল ইসলাম তোফা
সাংবাদিক ও কলামিষ্ট
Read more...