।। সেলিনা জাহান প্রিয়া ।।
বালিকা তুমি বড় সুন্দরী, বাহ উঠতি বয়স
কাঁচা আমে রং লিগেছে ! বালিকা তোমার ,
মাথায় কাপড় , শরীর ঢাকা , তাতে কি ?
চোখ যে আমার দারুন শিকারি ! আহ বালিকা !
বালিকা তোমাকে চাই আমার ! চাইয়েই চাই ।
বালিকা কে এক দিন ফাকা রাস্তায় শিকারি পায়
স্বীকার করার সব সুযোগ !
তোমাকে ধর্ষণ করবে বালিকা
তোমার প্রেমিক পুরু্ষ ! তাঁর প্রেমের লালসায় ।
অসম্ভব যন্ত্রণায় কাতরাবে তুমি বালিকা
ধর্ষণের পর দৌড়াবে তুমি, বালিকা !
আমি চেয়ে দেখব তোমার বাচার আকুতি
বালিকা কত বার প্রেম চাইলাম দিলি না !
এখন মজা বুঝ প্রেমের নাম কত যন্ত্রণা !
বালিকা তোর জন্য আমার ঘুম আসতো না
বুকের ভিতর বালিকা ভোগের লালসা
প্রেম দিবি না !! এখন বুঝ ধর্ষণ কি যন্ত্রণা !!
ধর্ষিত বালিকা ! এখন
দৌড়াবে পুলিশ স্টেশানের দিকে।
তারপর আর সময় নষ্ট নয়,
কত কি প্রশ্ন ? একা কেন গেলে
এই বয়সে কেউ কি একা বের হয়
মেয়ে মানুষ তুমি কেন আগে সাবধান হয় নাই ...
তৎক্ষণাৎ সারা পুলিশ স্টেশানের মানুষ গুলো
তাদের চোখে তোমাকে ধর্ষণ করবে, গুপনে
সারা শরীর জুড়ে নানা প্রশ্ন করে,
বারবার প্রশ্ন করে মজা নিবে সারা রাতভর।
আর তুমি, কাদবে মাথা আর বুকের কাপড় ঠিক করে
মারাত্মক ভাবে ক্ষত বিক্ষত হবে তোমার মন ।
কেউ হয়ত দেখতে চাইবে কোথায় কোথায় কামড় দিল
কেউ দেখবে কতটা লাল হয়েছে শরীর ।
বারবার তুমি রক্তাক্ত হবে,
তোমার কান্না ফুপিয়ে ফুপিয়ে উঠবে।
সাপের কামড়ের মত তোমার সমস্ত সত্তা দখলে নেবে।
কিছু পুলিশ তোমাকে নিয়ে আসবে তোমার মহল্লায়,
সেখানে তোমাকে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করে মানসিক ভাবে
ধর্ষণ করা হবে দফায় দফায় ।
তোমার প্রতিবেশী ছিঃ ছিঃ করবে
আর বলবে সব শেষ
কি হবে মেয়েটার
তোমার মহল্লা
তোমার সমাজ
তুমি ধর্ষিতা বলে ঘৃণার তীর চূড়ে মারবে,
তুমি মুখ লোকাবে,
নিজকে আড়াল করতে চাইবে,
পারবেনা।এ সমাজ তোমাকে দেখবে
কোথায় কোথায় করেছে ধর্ষণের আঘাত ।
বালিকা তোমার হৃদক্রিয়া বন্দ হইতে চাইবে
কিন্তু পারবে না, তুমি শুধু কাদবে
তুমি তো বালিকা জন্ম হয়েছে
শত বার ধর্ষণের জন্য ?
পুলিশ তোমাকে নিয়ে যাবে হাসপাতালে
সেখানে তোমার মনে হবে
তোমাকে নিয়ে আসা হয়েছে
এক জমের মৃত্যুর পাতালপুড়িতে।
হাসপাতালে আবার তোমাকে নিয়ে তৈরি হবে
বিনোদন মূলক এক মেডিকেল টিম।
তোমাকে এবার তারা করিবে পরীক্ষার নামে
কত কিছু তবে তাঁকে ধর্ষণ বলা যাবে না !
বালিকা তাঁকে ধর্ষণ বলা যাবে না
সেই টিমের সবাই তোমাকে উপভোগ করবে
বিবস্ত্র করে এক নতুন জন্ম নেয়া মেয়ে হিসাবে
বালিকার সোনার দেহ তারা কষ্টি পাথরে দেখবে
বালিকা তোমার কষ্ট যাবে না ।
বালিকা এখানেই শেষ না ।
টু ফিঙ্গার টেস্টের নাম করে
তোমার অপ্রাপ্ত জরায়ুতে ঢুকিয়ে দেবে
তাদের সমস্ত কয়টা হাত।
তারাও কিছু বের করতে চায়
বালিকা একবার ধর্ষণ তো
হাজার বার তোমার সাথে নাটক ।
তুমি কাঁদবে আর কাদবে
তুমি চিৎকার করবে আর করবে
তোমার চিৎকারে বালিকা কি হবে ?
তুমি তোমাকে হত্যা করতে চাইবে।
পারবে না কারণ! বালিকা
তাদের বিনোদন তো
এখনো শেষ হয়নি তোমাকে নিয়ে।
অবুঝ বালিকা প্রেম করলা না কেন ?
যখন বিনোদন শেষ হবে
তখন শুরু হবে আরেক রঙ্গমঞ্চ নাটক
আদালত তাঁর নাম বালিকা ।
যেখানে থাকবে কালো পোশাক পড়া
অনেক জ্ঞানী গুনি সব দালালেরা
মিথ্যুক নিপুন অভিনেতা, তারা
নিপুন ভাবে ফুটিয়ে তুলবে তোমাকে
ধর্ষণ করার প্রক্রিয়া কাব্যিক ভাবে।
পুনঃ পুনঃ আলোচনায় আনবে
তোমার ভিতরে লোকান তোমার স্বপ্ন গুলো
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটে যাওয়া বিক্রিয়া, তুলে
যে আলোচনা চলতে থাকবে বছরের পর বছর।
তোমার বাবা এই রঙ্গমঞ্চ বন্ধ করতে চেষ্টা চালাবে
মৃত্যুর ঠিক পৃর্ব মূহুর্ত অবধি,
কিন্তু পারবেন না।
এখানেই শেষ না বালিকা
তোমাকে নিয়ে লিখা হবে পত্রিকা জুড়ে
যা হয়েছে তাঁর চেয়ে বেশি !
তোমার ছবি ছপানো হবে প্রথম পাতায়
যেন তুমি বাংলা সিনেমার উঠতি নায়িকা
যতই ছাপাবে ততই ব্যবসা !
বালিকা তুমি কিন্তু এখন কর্পোরেট ব্যবসা
টি ভি নিউজে তুলে ধরবে তোমার ,
বাবা মা ভাই বোনের কান্যা
প্রতিবেশীর মতামত ! বালিকা নিউজটা কেমন হল
তখন তারা কফির টেবিলে বসবে আড্ডা
তোমার ধর্ষণের খবর তারা ফ্যাশনের হাসি
দিয়ে প্রচার করবে! কি মিষ্টি সে হাসি !
সেই খবর পাঠিকার মুখে !
যেন সিনেমা মুক্তি দিল তাঁর চ্যানেলে
তোমাকে নিয়ে ! তোমার ছবি নিয়ে
সোশ্যাল মিডিয়া ফেইস বুক টুয়েটার ,
লাইক আর কমেন্টের খেলা !
কেউ হয়ত তোমার জন্
রাস্তায় নামবে প্রতিবাদের ব্যানার নিয়ে
সেই গুলো এবার ছাপাবে
সকল নিউজ আর মিডিয়ায় ।
বালিকা
বেশ অনেক পরে,
একদিন বালিকা তুমি দেখবে
তোমার পাশে আর কেউ নেই
তারিখের পর তারিখ
বালিকা গরীবের মেয়ে ধর্ষিত হয় না !
আর যদি হয় তখন বিচার পাওয়া যায় না।
কত গুলো পরীক্ষা বালিকা
সবাই কি পাস করে বালিকা
এমন অনেক বালিকা আজ
ফেইল করে আছে
কে রাখে তার খবর
যদি ব্যবসা না আসে
এটা কর্পোরেট দুনিয়া ।।
ধর্ষণের সময় তুমি
অসম্ভব ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত হওয়ার বদলে
কোন সুখ পেয়েছিলে কিনা?
সমাজ তাও জানতে চাইবেই
বালিকা !! প্রেম করবা না।।